ইমাম হুসেইন (আ) : ইসলামের এক মহান বীর যাঁর ত্যাগ আমাদের আজও কাঁদায়। - ICT-তে জীবন গড়ি

Infotech Ad Top new

Infotech ad post page Top

ইমাম হুসেইন (আ) : ইসলামের এক মহান বীর যাঁর ত্যাগ আমাদের আজও কাঁদায়।

ইমাম হুসেইন (আ) : ইসলামের এক মহান বীর যাঁর ত্যাগ আমাদের আজও কাঁদায়।

Share This
ইমাম হুসেইন একটি অবিনশ্বর নাম, যাঁর মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ইসলাম রইল নিষ্কলুষ। সেদিন যদি এই মতাত্মা পাষন্ডরুপী, দুশ্চরিত্র, দুরাত্মা ইয়াজিদের (যদিও তার এই সকল বিশেষন প্রযোগে ইসলাম ধর্মের আলেম গণের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে) নিকট আত্ম সমর্পণ করতেন,তার বশ্যতা মেনে নিতেন তাহলে আমরা আজ যে, বিশুদ্ধ ইসলাম পেয়েছি তার উপর কালিমা লেপন হত। তাইতো ইমাম হুসেইন (আঃ) এর আত্মত্যাগ আমাদের শিক্ষাদেয় অ্ন্যায়ের কাছে মাথা না নোয়াতে।

মহামতি মুয়াবিয়া (রহ:) তাঁর খিলাফতে শেষ দিকে তার উত্তরাধিকার ইয়াজিদকে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দেখতে আগ্রহ প্রকাশে করেন। কিন্তু তাঁর এই সিদ্ধান্তে তখন অনেকেই খুশি হতে পারেননি। কারন ততদিনে মুসলিম বিশ্বের অনেকেই ইয়াজিদের বেপরোয়া, উত্তাল জিবনাচরণ সম্পর্কে অবহিত হয়ে গিয়েছিল। তাই খলিফা নির্বাচনে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হযরত মুয়াবিয়াকে অনুরোধ করেন। কিন্তুু হযরত মুয়াবিয়া সকল গণতান্ত্রিক প্রথার বাইরে গিয়ে মৃত্যুর পুর্বে ইয়াজিদ কে খলিফা হিসাবে নিযোজিত রেখে যান। এত করে মুসলিম সাম্রাজ্যে একটি বিদ্রোহ দানা বাধতে থাকে, অনেকেই খলিফা হিসাবে ইয়াজিদের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসে। তদস্থলে  তাঁরা ইসলামের খলিফা হিসেবে যোগ্য উত্তরসুরী প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স) এর দৌহিত্র ইমাম হুসেইন (আ) কে দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এখানেই বাধে বিপত্তি। ক্ষমতার মোহে অন্ধ ইয়াজিদ খলিফা হিসেবে ক্ষমতায় আসীন হয়েই ইমাম হোসেনের সাথে প্রতিদন্দীতায় লিপ্ত হন। তাই কুফার অধীবাসীদের আমন্ত্রনে ইমাম হুসেইন কুফায় আগমন করলে ইয়াজিদের নির্দেশে ওবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ ও তার অণুচররা তাঁকে কারবালার প্রান্তরে অবরুদ্ধ করে রাখে। ফোরাত নদীর পানি সরবরাহ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।  খাদ্য ও পানিয়ের অভাবে ইয়াজিদ সেনাদের আক্রমনে ইমাম হুসেইন এর সঙ্গে যারাঁ ছিলেন তাদের অনেকেরেই মৃত্য হয়। নিরুপায় ইমাম হুসেইন কোলের শিশু আসগরকে পানি খাওয়াতে ফোরাত কুলে যেতে উদ্যত হলে, তীরের আঘাতে তাঁর বাহুতে মাসুম বাচ্চা প্রান চলে যায়। কাঁদতে কাঁদতে ইমাম হুসেইন মাটির উপর বসে পড়েন। কারবালার প্রান্তরে যখন সবাই শাহাদাত বরণ করছেন এবং ইমাম হোসাইন (রা.) কেবল একা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন তাঁর শেষ কয়টি কথার কিছু অংশের অনুবাদ :
‘কেন আমাকে হত্যা করতে চাও?
আমি কি কোনো পাপ অথবা অপরাধ করেছি?’
এজিদের সৈন্য বাহিনী বোবার মতো দাঁড়িয়ে রইল। পুনরায় ইমাম হোসাইন(রা.) বললেন,
‘আমাকে হত্যা করলে আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবে?
কী জবাব দেবে বিচার দিবসে মহানবীর কাছে?’
এজিদের সৈন্য বাহিনী পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। আবার ইমাম হোসাইন (রা.) বললেন,
‘হাল্ মিন্ নাস্রিন ইয়ানসুরুনা?’
‘আমাদের সাহায্য করার মতো কি তোমাদের মাঝে একজনও নাই?’
তারপরের আহ্বানটি সাংঘাতিক মারাত্মক। ঐতিহাসিকদের মতে এটাই ইমাম হোসাইন(রা.) শেষ আহ্বান ছিল।
‘আলাম তাস্মাও? আলাইসা ফিকুম মুসলিমু?’
‘আমার কথা কি শুনতে পাও না? তোমাদের মাঝে কি মাত্র একটি মুসলমানও নাই?’
কেউই এই পবিত্র আত্মার কথার কোনো জবাব দিতে পারল না। সমস্ত কারবালা নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে গেল । এবার যারা ইমাম হোসাইন (রা.) কে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম ধরে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন-
‘হে শাবস ইবনে রাবয়ী! হে হাজর ইবনে আবজার!
হে কায়েস বিন আশআস! হে ইয়াজিদ ইবনে হারেস!
হে জায়েদ ইবনে হারেস! হে আমর ইবনে হাজ্জাজ!
... তোমরা কি চিঠি লিখে আমাকে আমন্ত্রণ জানাও নি?
তোমরা কি আমাকে কুফায় আসার জন্য বারবার চিঠি লিখে অনুরোধ করোনি?
তোমরা কি চিঠিপত্র ও দূত পাঠিয়ে বলোনি যে, আমাদের কোনো ইমাম নেই, আপনি আমাদের মাঝে তাশরিফ আনুন এবং আপনার মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা হয়তো আমাদের সঠিক নির্দেশনা দেবেন। তোমরা এও লিখেছিলে যে, যাদের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতা দাবি করে এবং অন্যায় আচরণ করে, তাদের চাইতে ইসলামী শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আহলে বাইত-ই অধিকযোগ্য (বেশি হক্বদার)।’  ইমাম সাহেবের পবিত্র দেহে ১৯০ টা তরবারীর ঘা এর দাগ ছিল যা ইয়াজিদিয়া তথাকথিত মুসলিমরা আহত অবস্থায় একে র পর দিয়ে ছিল। সবচেয়ে আশ্চর্য এর বিষয় ছিল যে তার দেহ এ আঘাত করে তারা আসর এর নামাজ আদায় করেছিল এবং নামাজে বলেছিল মুহাম্মদ (স) ও তার বংশ ধরদের ওপর সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক।!!! এ কোন ধরনের নামাজ ছিল তা সেই পাষন্ডরাই ভাল করেই জানেন।


হজরত ইমাম হুসেইন (আ) এর রক্তমাখা শহিদি জামা মোবারক। ইমাম কে যখন নির্মম ভাবে হত্যা করা হ য়, তখন তিনি এই পাক জামা মোবারক পড়ে ছিলেন। ১৪০০ বছর এর বেশি হয়ে গেছে তবুও জামায় শুখায়নি রক্তের লাল দাগ( সুবহানাল্লাহ)। এই জামাটা বর্তমানে তুরস্কের তুকাপি মিউজিয়ামে সং রক্ষিত আছে। প্রতি বছ র লাখ লাখ মুস লমান সেই জামা মোবারকের সামনে কান্না কাটি করে,সালাম ও দরুদ প্রেরন করেন।

ইমাম হুসেইন (আ) কে নিয়ে কিছু আলৌকিক ঘটনা সমুহ:
ঘটনাটি গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের হিজরী ১৪৩৬ সন মহররম মাসের যেদিন হঠাৎ করেই ইমাম হুসেইন (আ) এর মাজারের মেঝে ও দেওয়ালে ছোপ-ছোপ রক্তের দাগের দেখা মেলে। হাজারও দর্শনার্থী দেখে বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে যান। দেখতে চাইলে দেখুন সেই ভিডিওটি বিশ্বাস করা বা না করাটা আপনার একান্ত নিজের।


অ্যাল্লেপোর পাথর যার উপর হযরত ইমাম হুসেইন (আ) এর পবিত্র মস্তক ছেদ করে রাখা হয়েছিল, সেই পাথরটি থেকে আজও রক্তের ধারা দৃশ্যমান হয়। যা শুধু অস্বাভাবিক নয় আলৌকিকও বটে। সেই যুগের ইতিহাস বিদদের বর্ননা হতে জানা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ (স) এর প্রানাধিক প্রিয় দৌতিত্র ইমাম হুসেইন (আ) এর শিরচ্ছেদ করার পর এই পাথর খন্ডের উপর তার পবিত্র মস্তকখানা রাখা হযেছিল এবং এক ফোটা রক্ত এই পাথরটি লেগেছিল। তারপরেই এই মহাপবিত্র মস্তকখানি নিয়ে যাওয়া হয় দামেস্কে। তখন থেকেই এই পাথরটির উপর রক্তের ধারা লক্ষ্য করা যায় যা আজ ১৪০০ বছর পরেও পরিলক্ষিত হয়। দেখুন সেই পবিত্র পাথর খানি যা আজও সংরক্ষিত আছে-



পৃথিবীর মহান মানব যাদের সৃষ্টি ও অন্তর্ধানে রয়েছে অপার রহস্য যা একমাত্র মহান আল্লাহ তা-আলা ছাড়া আর কেউ জানেন না। দয়া করে কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না। বিশ্বাস-অবিশ্বাস আপনার মনের মাঝে অবস্থান করে। আপনার একটি খারাপ মন্তব্য আর একজনের মন ভেঙ্গে দিতে পারে। আর এ থেকেই জন্ম নিতে পারে অসহিষ্ঞুতা আর অসন্তোষ। যা পুরো সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

No comments:

Post a Comment

Infotech Post Bottom Ad New

Pages