প্রাথমিক সমাপনী ২০১৫: বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ ! - ICT-তে জীবন গড়ি

Infotech Ad Top new

Infotech ad post page Top

প্রাথমিক সমাপনী ২০১৫: বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ !

প্রাথমিক সমাপনী ২০১৫: বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ !

Share This
তাহেরা বিনতে রহমান

তাহেরা বিনতে রহমান, তিনি বাংলাদেশের একটি স্বনাম ধন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নুন স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বেইলি রোড, ঢাকা এর সিনিয়র শিক্ষিকা। ইনফোটেকলাইফ.কম  একটি শিক্ষা বিষয়ক ব্লগ। সামনেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, তাই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার একটি অন্যতম বিষয় ’ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ এর উপর এই স্বনামধন্য শিক্ষিকার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ উল্লেখ করা হল। তো আসুন শুনি তাঁর মুখ থেকেই।


এ বছর প্রশ্ন পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আগে ১০ নম্বরের শূন্যস্থান পূরণ ছিল। এ বছর তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৫০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে, মান ৫০। সংক্ষেপে উত্তর ১৫টি, মান ১৫। আর কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর লিখবে ৭টি, এর প্রতিটির মান ৫ করে মোট ৩৫। এই ৭টি প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য ১০টি প্রশ্ন দেওয়া থাকবে, যার মধ্যে প্রথম ৪টি থাকবে যোগ্যতাভিত্তিক এবং যেগুলো অবশ্যই লিখতে হবে।

মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে যোগ্যতাভিত্তিক। বহু নির্বাচনী ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নের দুই জায়গায়ই যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে।

বহু নির্বাচনী প্রশ্ন:
বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তরের জন্য বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় ভালো করে পড়বে। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নগুলো ভালো করে খেয়াল করবে। প্রশ্ন ভালো করে পড়ে উত্তর লিখবে। অনেক সময় তোমরা প্রশ্ন ভালো করে না পড়েই উত্তর লিখো। ফলে উত্তরটি ভুল হয়ে যায়।

যেমন-বহু নির্বাচনী প্রশ্নে যোগ্যতাভিত্তিক একটি প্রশ্নের নমুনা হলো-তুমি বান্দরবান শহরের কাছে চিম্বুক পাহাড়ে গিয়ে একটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তা দেখতে পেলে, যাদের সমাজের একটি রীতি হলো-শিশুদের বয়স তিন বছর হলে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের কান ছিদ্র করে দেওয়া হয়। এই ক্ষুদ্র জাতিসত্তাটির নাম কী?

উত্তরে চারটি অপশন থেকে তুমি সঠিক জাতিসত্তার নামটি তোমার খাতায় লেখো। যদি উত্তরের অপশনে দেওয়া থাকে-

ক) গারো খ) ম্রো

গ) খাসি ঘ) ত্রিপুরা।

তাহলে উত্তর লিখবে-খ) ম্রো।

অথবা প্রশ্ন হতে পারে-বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মেট্রিক টন ডালের চাহিদা রয়েছে। যে পরিমাণ ডাল দেশে উৎপাদন হয় তার ফলে বাংলাদেশকে কী পরিমাণ ডাল আমদানি করতে হবে?
এই প্রশ্নটির উত্তরের জন্য তোমাকে অবশ্যই বাংলাদেশে উৎপন্ন ডালের সঠিক পরিমাণটি জানতে হবে। তবেই তুমি মোট চাহিদা থেকে উৎপন্ন ডালের পরিমাণ বিয়োগ করে উত্তরটি বের করতে পারবে এবং চারটি অপশন থেকে সঠিক উত্তরটি বাছাই করবে। কেননা এই প্রশ্নের ৪টি উত্তরের কোনোটিই সরাসরি তোমার বইতে নেই। এভাবেই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যোগ্যতাভিত্তিক উত্তরগুলো বাছাই করবে। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নের উত্তরের জন্য অবশ্যই বইয়ের প্রতিটি প্যারা ভালো করে পড়তে হবে। আর জ্ঞানমূলক প্রশ্ন সরাসরি বই থেকে আসবে, যার জন্য তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। যেমন-লালবাগ দুর্গ তৈরির কাজ শুরু হয় কত সালে? সঠিক সালটি জানা থাকলেই উত্তরটি লিখতে পারবে।



সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নে উত্তর অবশ্যই সংক্ষেপে লিখবে। তবে এক শব্দে লিখবে না। অর্থাৎ পুরো বাক্য লিখে উত্তর দেবে। যেমন-অটিস্টিক শিশু কাকে বলে?

এর উত্তরে লিখবে : অটিজম নামক একটি বিকাশগত সমস্যায় আক্রান্ত শিশুকে অটিস্টিক শিশু বলে।



অথবা যদি প্রশ্নে থাকে, দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান কিভাবে নির্ধারিত হয়?

উত্তরে লিখবে : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদি সব কিছু মিলেই নির্ধারিত হয় দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান। এভাবেই পুরো বাক্যের মাধ্যমে সংক্ষেপে উত্তর লিখবে।



কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন :
প্রথম ৪টি প্রশ্নই থাকবে যোগ্যতাভিত্তিক। যোগ্যতাভিত্তিক হচ্ছে পঠন-পাঠনের মাধ্যমে তোমার অর্জিত জ্ঞান ও উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে প্রশ্নের উত্তর লেখা। এর মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে অনুধাবন এবং তা বাস্তব প্রয়োগে তোমার ক্ষমতা যাচাই করা হবে।
বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় ভালো করে পড়তে হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের জনসংখ্যা, জলবায়ু ও দুর্যোগ, মানবাধিকার, আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, গণতান্ত্রিক মনোভাব ইত্যাদি অধ্যায় ভালো করে পড়বে। সেই সঙ্গে প্রথম অধ্যায়টিও পড়বে। এর জন্য শুধু অনুশীলনীতে দেওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর পড়লেই চলবে না। বইয়ের ভেতর থেকেও প্রশ্নোত্তর আসতে পারে।

একটি প্রশ্নের মধ্যে ২টি বা ৩টি অংশ থাকবে। যেমন-কাকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়? তিনি কখন জন্মগ্রহণ করেন? শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান তিনটি বাক্যে লেখো। এই উত্তরটিতে লিখবে বেগম রোকেয়াকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়। তিনি ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান

(ক) নারী শিক্ষার বিষয়ে সমাজকে সচেতন করতে তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক মাস পর ১৯০৫ সালে বেগম রোকেয়া ভাগলপুরে 'সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল' প্রতিষ্ঠা করেন।

(খ) শুরুতে এই স্কুলের ছাত্রীসংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচজন। পরবর্তী সময় ১৯১১ সালে স্কুলটি কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হলে ছাত্রীসংখ্যা বেড়ে হয় আটজন।

(গ) বেগম রোকেয়া বাড়ি বাড়ি ঘুরে মা-বাবার কাছে আবেদন ও অনুরোধ করতেন-ছেলেসন্তানের মতো মেয়েসন্তানকেও যেন তাঁরা বিদ্যালয়ে পাঠান।

এভাবে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো পেতে থাকে।



বহু নির্বাচনী, সংক্ষেপে উত্তর বা বড় প্রশ্ন-যারই উত্তর লিখবে খেয়াল রাখবে প্রতিটি উত্তরের মাঝে যেন কিছুটা খালি জায়গা থাকে। প্রতিটি লেখা যেন স্পষ্ট অক্ষরে হয়। এতে যিনি খাতা দেখবেন তাঁর যেমন খাতা দেখতে সুবিধা, তেমনি তোমারও ভালো নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

লেখাটি পুর্বে কালের কন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত

No comments:

Post a Comment

Infotech Post Bottom Ad New

Pages