মাধ্যমিক শিক্ষক হওয়ার প্রস্তুতি - ICT-তে জীবন গড়ি

Infotech Ad Top new

Infotech ad post page Top

মাধ্যমিক শিক্ষক হওয়ার প্রস্তুতি

মাধ্যমিক শিক্ষক হওয়ার প্রস্তুতি

Share This


দীর্ঘদিন স্থগিত থাকা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে ধাপে ধাপে। শিক্ষকতার স্বপ্ন যাদের, এখন থেকেই জোর প্রস্তুতি নিতে হবে।

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৩৭৮ শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) কাছে প্রার্থী বাছাই করতে প্রস্তাব করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পিএসসি থেকে সবুজ সংকেত পেলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এখন প্রশ্ন আপনি এই নিয়োগের জন্য কতটা প্রস্তুত আপনি।

পরীক্ষা পদ্ধতি:
সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাধারণত ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৮০ নম্বরের লিখিত নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষায় বরাদ্দ থাকে ২০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয় বহু নির্বাচনী বা এমসিকিউ পদ্ধতিতে। প্রশ্ন করা হয় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান থেকে। প্রতিটি বিষয় থেকে ২০টি করে মোট ৮০টি এমসিকিউ প্রশ্ন থাকতে পারে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। থাকে নেগেটিভ মার্কিং।

বাংলায় ভয় অকারণ:
২০১৩ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মুন্সী মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, উল্লেখযোগ্য কবি-সাহিত্যিকদের জীবন ও সাহিত্যকর্ম, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। গল্প, কবিতা বা উপন্যাসের রচয়িতা থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। ব্যাকরণ অংশে শব্দ, পদ, কারক-বিভক্তি, প্রকৃতি-প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস, শুদ্ধ বানান পড়তে হবে। পারিভাষিক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। সন্ধি, সমাস, কারক থেকে প্রায় প্রতিবছরই প্রশ্ন থাকে। বোর্ড প্রণীত নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইটি বেশ কাজের। এটি থেকে ব্যাকরণের প্রস্তুতি নিতে পারেন।

ইংরেজিতে গ্রামারে গুরুত্ব:
২০১২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাজমা ইয়াসমিন জানান, বেসিক গ্রামার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। সাধারণত Spelling, Right forms of verb, Antonym, Synonym থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। পড়তে হবে Preposition, Synonym, Antonym, Parts of Speech, Tense, Spelling, Right forms of verb, Transformation, Voice, Narration| চারটি Preposition থেকে শূন্যস্থানে কোনটি বসবে, গ্রামারের বিচারে কোন বাক্যটি শুদ্ধ, কোনটি সঠিক Indirect Speech-এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসে। বিগত কয়েক বছরের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখলে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে।

অনুশীলনের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগের সহায়ক বই, প্রফেসরস জব সল্যুশন এবং ভালো মানের একাধিক গ্রামার বই পড়তে পারেন।

গণিতে বারবার চর্চা:
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সোহানুর রহমান জানান, সুদকষা, ঐকিক নিয়ম, লাভ-ক্ষতি, ভগ্নাংশ, ধারাপাত এবং বীজগণিতের প্রথম পর্যায়ের কিছু অঙ্ক থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। অনেক সময় দশমিকের গুণ, ভাগ থাকে। জ্যামিতির সাধারণ সূত্র ও সংজ্ঞা থেকেও প্রশ্ন আসে। পুরনো পাঠ্যক্রমের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করতে হবে। দেখে যেতে হবে এইচএসসি পর্যায়ের বইও। গণিতের প্রস্তুতি এমনভাবে নিতে হবে, যেন মুখে মুখেই অঙ্কের বেশির ভাগ সমাধান করে নেওয়া যায়, বারবার চর্চা করলেই এটা সম্ভব। সাধারণ ক্যালকুলেটর নেওয়া গেলেও সময়স্বল্পতার কারণে সব সময় ব্যবহার করতে যাওয়াটা বোকামি। কম গণিতের সমাধান বের করতে অনেকে বেশি সময় নিয়ে ফেলেন। এ ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

সাধারণ জ্ঞানে সাম্প্রতিকে জোর:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, অভ্যুদয়ের ইতিহাস, জাতীয় বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন আসে। আন্তর্জাতিক অংশে দক্ষিণ এশিয়া এবং এশিয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন বেশি দেখা যায়। খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পুরস্কার, দিবস ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন আসে। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট প্রশ্ন যেমন—বিভিন্ন আবিষ্কার, রোগব্যাধি, বিভিন্ন খাদ্যগুণ, কম্পিউটার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতির জন্য আজকের বিশ্ব, এমপিথ্রি, নতুন বিশ্ব পড়তে পারেন।

২০১২ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কৃষ্ণ অধিকারী জানান, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন বেশি থাকে। বিশেষত এক বছরের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পড়তে হবে জাতীয় পত্রিকা এবং সাধারণ জ্ঞানবিষয়ক মাসিক সাময়িকী।

পরীক্ষার হলে করণীয়:
কৃষ্ণ অধিকারীর পরামর্শ, যে প্রশ্নগুলো সহজেই উত্তর করা যায়, তা শুরুতেই দাগিয়ে ফেলতে হবে। কোনো প্রশ্নে বেশি সময় নষ্ট করা যাবে না, কোনো প্রশ্ন না পারলে পরের প্রশ্নে চলে যেতে হবে। অনুমাননির্ভর উত্তরের চেয়ে না দাগানোই ভালো। তবে চারটি অপশনের মধ্যে দুটি ভুল উত্তর বের করতে পারলে বাকি দুটির মধ্যে একটি বেছে নেওয়া যেতে পারে। জানা প্রশ্নেও কোনোটির উত্তর করবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন অনেকে। প্রথমবার যেটি সঠিক বলে মনে হয়, উত্তর সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা সেটির বেশি!

বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধান করলে কাজে দেবে। নিজেকে যাচাইয়ের জন্য বিসিএস প্রিলিমিনারিসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে পারেন।

মৌখিক পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ:
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হবে। পরিপাটি হয়ে যেতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় থাকবে ২০ নম্বর। প্রার্থীর নিজের সম্পর্কে, নিজ জেলার থানা বা উপজেলার আয়তন, জনসংখ্যা, সংস্কৃতি, জেলার ইতিহাস, বিখ্যাত ব্যক্তি, রাজনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে। সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন করা হতে পারে। সমসাময়িক বিষয় থেকেও প্রশ্ন থাকে।

সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ/আরএজে

No comments:

Post a Comment

Infotech Post Bottom Ad New

Pages