সকলকে আমার ব্লগে স্বাগতম। আশা করি সকলে ভাল আছেন। বর্তমান পৃথিবী বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো বিশ্ব মোড়ল ও তাদের ক্রীড়ানকদের দ্বারা সৃষ্ট এক অশান্ত ও অস্তিতিশীল পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করছে। বলা হয়ে থাকে যে, আমরা আরব বিশ্বে যে অস্থিতিশীল ও অশান্ত পরিবেশ লক্ষ্য করছি তার মূলেই রয়েছে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট। বিশ্ব মোড়ল আমেরিকার একচোখা নীতি আর ক্রমাগতভাবে মুল পরিস্থিতিকে এড়িয়ে চলার কারনেই আজ ফিলিস্তিনীরা নিজ দেশে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে, যেখানে তারা বহুকাল আগে থেকে বসবাস করে আসছিল। আমি আমার আজকের এই লেখনীতে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আর তা হল কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরায়েল নামক ইহুদি রাষ্ট্রটির জন্ম হল। আশা করি আমার এই ধারাবাহিক লেখনী আপনাদের জ্ঞান তৃঞ্ষার সামান্যতম হলেও মেটাবে। আর তা পারলেই আমি আমার শ্রমকে স্বার্থক বলে মনে করব। গঠন মুলক মন্তব্য পেলে উৎসাহিত হব।
জেরুজালেম ধর্মীয় দিক থেকে মুসলিম, ইহুদী ও খ্রিস্টান তিন ধর্মেরই একটা পবিত্রতম স্থান। যার পূর্ব দিকে রয়েছে পশ্চিম তীর অর্থাৎ ওয়েস্ট ব্যাংক এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে তথাকথিত স্বঘোষিত ইসরাইল রাষ্ট্র। খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারীগণ এখানে তৃতীয় পক্ষ হলেও মূলত: দ্বন্দ ও সংঘাতে লিপ্ত মুসলিম ও ইহুদী ধর্মাবলম্বীগণ। কারন এ বিবাদের বিষয় যতটা রাজনৈতিক ততটাই ধর্মীয় বা তারচেয়েও বেশি। যাই হউক জেরুজালেমও দখলদার ইসরায়েলের অধীনে। আসলে আমরা যাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বলে থাকি দখলদারিত্বের আগ্রাসী ভুমিকায় তার তো এখন কোন অস্তিত্বই আছে বলে আমি মনে করিনা। শান্তিচুক্তি বা দ্বি-রাষ্ট্র চুক্তি যদি কোনদিন আলোর মুখ দেখে তবেই প্রতিষ্ঠিত হবে প্রস্তাবিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র। সেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পানে তীর্থের কাকের মত চেয়ে আছে আজও প্রতিটি ফিলিস্তিনি। দখলদারিত্বের চাপের কাছে ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে ফিলিস্তিনিরা তাদের পুরো ভূ-খন্ডের দাবি থেকে আজ সরে এসেছে। তাদের প্রস্তাবিত দাবি তাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রটি গঠিত হবে গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর আর পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে যার রাজধানী হবে পুর্ব জেরুজালেম। কিন্তু পশ্চিমা মদদ পুষ্ট, অত্যাচারী দখলদার ইসরায়েল তার বর্তমান রাজধানী তেলআবিব হতে সরিয়ে পুরো জেরুজালেমকে তার রাজধানী করার দাবী করে আসছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে ইসরায়েল এই দাবি এত বাস্তবায়ন করার সাহস দেখায়নি। বলা বাহুল্য ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র এতদিন ইসরায়েল ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় প্রধান মধ্যস্থতাকারীর ভুমিকায় ছিল। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর করার ব্যাপারে এই মিত্রদেশটি এতদিন ঢাক ঢাক গুড় গুড় নীতি অবলম্বণ করলেও সম্পতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প তো ইতোমধ্যে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী করার পক্ষে এবং সেই লক্ষ্যে তিনি ইতোমধ্যে তেলআবিব হতে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেম এ সরিয়ে নিয়েছেন।
ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম ২০ বছরের (১৯৪৮-১৯৬৭) দিকে জেরুজালেম ছিল বিভক্ত এবং জেরুজালেমের আংশিক এবং এর আশেপাশের আবাসিক এলাকাগুলো যেটি নিচের মাপে ( বাম পার্শ্বে ) লাল ডট চিহ্নিত স্থান হিসেবে দেওয়া আছে সেটা ইসরাইল শাসন করত। আর জর্ডান নিয়ন্ত্রণ করতো বাইরের অংশটুকু অর্থাৎ যেটি কে আমরা এখন পূর্ব জেরুজালেম বলে থাকি তার পুরোটাই (নিচের ম্যাপে বামে পশ্চিম তীর সংলগ্ন নীল ডট চিহ্নিত এলাকা সমুহ) এই পুর্ব জেরুজালেমেই রয়েছে টেম্পল মাউন্ট যেটি বামপাশের ম্যাপে বাদামী রং দিয়ে লেপন করা হয়েছে। এটি একটি পার্বত্য এলাকা।
টেম্পল মাউন্ট নামের এই পাহাড়টিতেই মুলসলমানদের প্রথম কিবলা পবিত্র আল-আকসা ও ডোম অফ দ্যা রক আর ইহুদীদের প্রাচীন মন্দির ও একটি পবিত্র স্থান রয়েছে যা একটি স্থায়ী সীমানা প্রাচীর দিয়ে বেষ্টিত যা ওয়েস্টারর্ন নামেও সমধিক পরিচিত। জর্ডানের নিয়ন্ত্রনে থাকাকালীন এই এলাকাটিতে ইহুদীদের ঢুকতে প্রার্থনা করতে দেওয়া হত না। ১৯৬৭ সালে যুদ্বে ইসরায়েল পুর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং সেই সময় কাল হতে অদ্যবধি ইসরায়েল পুরো জেরুজালেম নিয়ন্ত্রন করছে। আমি পুর্বেই বলেছি এই এলাকাটির রাজনীতির অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে জেরুজালেম ও সেখানকার ধর্মীয় ভাবাবেগকে ঘিরে। যা না বুঝলে এই দ্বন্দ সংঘাতের পুরোটাই আপনার নিকট গোলমেলে মনে হবে।
জেরুজালেম এখন বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি নাম। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দেয়ায় বিশ্বব্যাপী আবারো আলোচনায় এসেছে এই নামটি । জেরুজালেম শহরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে শত সহস্র বছরের প্রাচীন ইতিহাস।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন দুটি দেশই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে। ফলে এই দুটি দেশের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে এই শহর এবং সেখানে থাকা কিছু বিশেষ ছোট ছোট স্থানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রাচীন কাল থেকেই ভয়াবহ সংঘর্ষ চলে আসছে। সেটি বুঝতে হলে জেরুজালেমের অতীত ইতিহাঁস জানাটা জরুরী।
ইতিহাসে জেরুজালেম:
গবেষকদের দাবি প্রাচীন ব্রোঞ্চ যুগ থেকেই এখানে মানুষের বসবাস। ধারণা করা হয়, সেটা হতে পারে ৩৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকেই। বনি ইসরাইল হচ্ছে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত ইব্রাহিম (আ.)-এর বংশধরদের একটি শাখা। এ শাখারই একটি অংশ পরবর্তীকালে নিজেদের ইহুদি নামে পরিচয় দিতে থাকে। হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর এক পুত্রের নাম ছিল ইয়াহুদা। সেই নামের অংশবিশেষ থেকে ‘ইহুদি’ নামকরণ করা হয়েছিল। (তাফসিরে মাওয়ারদি : ১/১৩১) যুগে যুগে ইহুদিদের অপকর্ম ও ইহুদি জাতিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে ভুগেছেন হজরত মুসা (আ.)। ১০০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে কিং ডেভিড (ইসলামে বর্ণিত দাউদ আ: ) প্রথম জেরুজালেম জয় করেন এবং রাজধানী ঘোষণা করেন। তারপর তার ছেলে সলোমন (সুলাইমান আ:) অন্তত ৪০ বছর পরে এখানে প্রথম পবিত্র প্রার্থনালয় তৈরি করেন।
জেরুজালেম শহর
পরবর্তীকালে ৫৮৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ব্যবিলনীয়রা জেরুজালেম অধিকৃত করে। তারা সেই সব মন্দির ধ্বংস করে এবং ইহুদীদের নির্বাসনে পাঠায়। এরও ৫০ বছর পরে পার্শিয়ান রাজা সাইরাস আবার ইহুদীদের জেরুজালেমে ফেরত আসতে দেন এবং আবার মন্দির স্থাপন করেন।
৩৩২ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে এসে আলেক্সা্ন্ডার দ্য গ্রেট জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরবর্তীতে কয়েক শত বছর ধরে নানান দল এই শহরটিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের মধ্যে রোমান, পার্শিয়ান, আরবস, ফাটিমিড, সেলজুক, তুর্কি, ক্রুশাডার, ইজিপশিয়ান, মামেলুকিস ও মুসলিমরা ছিলো।
জেরুজালেম শহরটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্যই। কেননা এখানেই শিশু হিসেবে এসেছিলেন যিশু খ্রিস্ট। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এখানেই ধর্ম প্রচার করেছেন তিনি এবং জীবনের শেষে এখানেই ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছেন ও ঈশ্বরের দ্বারা পুনরত্থিত হয়েছেন। আবার ইহুদীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাদের ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মোজেসেরও (হযরত মুসা আ:) পূণ্যভূমি এই জেরুজালেম। ইহুদীদের প্রথম মন্দির এই শহরে অবস্থিত ছিলো।
এই লম্বা সময়ে জেরুজালেমের ইতিহাসে বেশ কিছু বড় বড় ধর্মীয় ঘটনাও ঘটেছে।
যেমন ৩৭ খ্রিস্টাব্দে রাজা হেরড সেখানে দ্বিতীয় মন্দির তৈরি করেন এবং সেটার চারপাশে দেয়াল তুলে দেন। রোমানরা সেটিও নষ্ট করে দেয় ৭০ খ্রিস্টাব্দে।
৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের নবী মোহাম্মদ (সা:) বুরাকে চড়ে বেহেশতে যান এই জেরুজালেম থেকেই। তবে তাঁর ধর্মীয় ইতিহাসে জেরুজালেমকে পবিত্র নগরী ভিন্ন আর কোনো বিষয়ে উল্লেখ করেননি।
অটোমান সাম্রাজ্য
১৫১৬ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অটোমান সাম্রাজ্যের দ্বারা শাসিত হয় জেরুজালেম ও মধ্যপ্রাচ্য।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে জেরুজালেম শাসন করে গ্রেট ব্রিটেন। সেই সময়ে ফিলিস্তিনের অংশ ছিলো জেরুজালেম। ব্রিটিশরা এই শহর ও আশপাশের এলাকাকে ১৯৪৮ সালে ইসরাইলের স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত শাসন করে চলে।
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম ২০ বছরের মধ্যেই জেরুজালেমকে ভাগ করে নেয়া হয়। সেখানে ইসরাইল পশ্চিম অংশ শাসন করতো আর জর্ডান নিয়ন্ত্রণ করতো জেরাজালেমের পূর্বাংশ।
টেম্পল মাউন্ট নিয়ে দ্বন্দ্ব
টেম্পল মাউন্ট
জেরুজালেমকে নিয়ে দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু টেম্পল মাউন্ট। এটি ৩৫ একর জমিতে অবস্থিত। এই টেম্পল মাউন্টের ধর্মীয় গুরুত্ব নিয়ে আমি উপরে কিছুটা লিখেছি। এ সম্পর্কিত আলোচনা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
টেম্পল মাউন্ট ও পবিত্র স্থান সমুহ
ইহুদী ধর্মে এই প্রাচীন স্থানটিকে খুবই পবিত্রতম স্থান হিসেবে ধরা হয়। এখানেই গড়ে উঠেছে তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় মন্দির । ইহুদী নবীদের শিক্ষাকেন্দ্রও এখানেই।
মক্কা ও মদিনার পরে আল আকসা মসজিদকে সবচেয়ে বেশি পবিত্রতম স্থান মনে করে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। ইসলাম ধর্মমতে এখান থেকে বেহেশতে ১৫ দিনের সফরে গিয়েছিলেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ(সাঃ)। খ্রিস্টানরাও তাদের বিশ্বাসের জায়গায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করে জেরুজালেমকে।
এছাড়া ডম অফ দি রক, ওয়েস্টার্ন ওয়াল, চার্চ অব দি হলি সেপুলচার নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে বেশ।
জেরুজালেমে সংঘর্ষ
জেরুজালেম নিয়ে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব। ইসরাইল রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার পর থেকে জেরুজালেম নিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে। বেশিরভাগ ফিলিস্তিনদের তাদের ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করে ইসরাইল রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ফিলিস্তিনিরা মেনে নিতে পারেনি। ইহুদী আইনমতে ইহুদীদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে টেম্পল মাউন্টে প্রার্থনা করার। তারপরও ইসরাইলি সেনারা টেম্পল মাউন্টে শত শত ইহুদীদের রুটিনমাফিক সেখানে প্রবেশ করতে দেয়। আর তাতেই ফিলিস্তিনিদের ধারণা ইসরাইল এই জায়গায় আরো বেশি প্রভাব বিস্তার করে ফেলবে।
সম্প্রতি কিছু ইসরাইলি গ্রুপ টেম্পল মাউন্টে তৃতীয় ইহুদী মন্দির বানানোর পরিকল্পনা করছে। আর সেই সিদ্ধান্তই এই এলাকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। আর একই সঙ্গে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন দুই দেশই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী করতে আগ্রহী। ১৯৮০ সালে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তখন তাদের এই সিদ্ধান্তে কোনো স্বীকৃতি জানায়নি। ২০১৭ সালের মে মাসে ফিলিস্তিনের হামাস গ্রুপ একটি ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে। সেখানে জেরুজালেমকে রাজধানী করে নতুন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নতুন করে গঠনের কথা বলা হয়। তারা ইসরাইলকে কোনো রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকৃতি জানায়। যদিও ইসরাইল সরকার সেটা বাতিল করে দেয়।
আধুনিক যুগের জেরুজালেম:
সাম্প্রতিক সময়ে জেরুজালেমের ভেতরে ও জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাকে ঘিরে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যেকার সংঘর্ষও খুব সাধারণ ঘটনা। জেরুজালেম শহরটি একই সঙ্গে ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিমদের জন্য একটি পবিত্র ধর্মীয় নগরী। এ কারণে এর দখল এবং প্রবেশাধিকার নিয়ে বহু বছর ধরেই তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মাঝে। ইসরায়েল সবসময়ই জেরুজালেমকে তার রাজধানী হিসেবে বলে এসেছে। কিন্তু ইসরাইল রাষ্ট্রের আনুষ্ঠাণিক রাজধানী তেলআবিব শহরই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যাপী।
ফিলিস্তিনিদের দাবি, পূর্ব জেরুজালেম ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী। একেশ্বরবাদী তিনটি প্রধান ধর্মের পবিত্রস্থান বলে বিবেচিত বেশ কিছু স্থাপনা রয়েছে জেরুজালেমে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের পত্তনের পর বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে টেম্পল মাউন্টে দুজন ইসরাইলি পুলিশ অফিসারকে গুলি করে তিন আরব। এরপর নিরাপত্তার অজুহাতে এই এলাকায় দর্শনার্থী শূন্য করা হয় এবং ১৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শুক্রবার মুসলিমদের প্রার্থনার জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় আল আকসা মসজিদে।
ইতিহাসে জেরুজালেম শহরের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ পর্যন্ত ৫২ বার আক্রান্ত হয়েছে জেরুজালেম। অবরোধ, দখল ও পুনরুদ্ধার হয়েছে ৪৪ বার। ঘেরাও করা হয়েছে ২৩ বার এবং ধ্বংস করা হয়েছে ২ বার। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো শহরটিতে একই সঙ্গে ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক শক্তি জড়িত রয়েছে প্রবলভাবে।
বর্তমানে ইসরায়েল অবিভক্ত জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী দাবি করছে যদি ও তাদের সকল প্রশাসনিক কাজ এ পর্যন্ত তেলআবিব হতেই পরিচালিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার গুটিকয়েক মিত্র দেশ ছাড়া ইসরায়েল এর এহেন অন্যায় আবদার এ পর্যন্ত মেনে নেয়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ৪৭৮ ধারায় অনুযায়ী ইসরায়েলের এহেন দাবীকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলকে সমঝোতার পথে হাঁটার আহবান করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে এবং এতদিনের নিরপেক্ষ অবস্থান হতে সরে এসে আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে পক্ষে অবস্থান নিয়ে পক্ষান্তরে আন্তজার্তিক ও বিশ্ব-সম্প্রদায়ের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি এই দুই প মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেকে প্রশ্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তাই জেরুজালেম ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া এখন হুমকির সম্মুখীন।
তো যাই হোক প্রিয় পাঠকগণ আমি এতক্ষণ ধরে জেরুজালেম নিয়ে যে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করলাম জানিনা আপনাদের কিছু দিতে পেরেছি কিনা। পরিশেষে আপনাদের সামনে পবিত্র জেরুজালেম নিয়ে বাংলা এমেচার ডকুমেন্টারী শেয়ার করছি। আমার জানামতে বাংলায় পবিত্র জেরুজালেম নিয়ে এত সুন্দর ডকুমেন্ট্যারী এ পর্যন্ত করা হয়নি। তো দেখুন ডক্যুমেন্টারীটি ------
ইনফোটেকলাইফ.কম এর তালিকা ভুক্ত একজন লেখক ও কলামিস্ট। তাঁর লেখা আপনাদের ভাল লাগলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্টস করে দয়া করে আমাদের উৎসাহিত করবেন। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখকের বিরুদ্ধে তাঁর লেখা নিয়ে আপনার কোন অভিযোগ থাকলে আপনি আমাদের অভিযোগ ডেস্ক-এ অভিযোগ করতে পারেন। ইনফোটেকলাইফ.কম কোন লেখকের বিতর্কিত লেখার দায়ভার বহন করেনা। তবে আপনার করা অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে উক্ত লেখককে অস্থায়ী কিংবা গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ইনফোটেকলাইফ.কম এর সাথে যুক্ত থাকতে নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে Join,Like ও Follow করুন।
আমি মোঃ আজাদ মিয়া। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও প্রশিক্ষক (ইংরেজী)। শিক্ষা বিষয়ক লেখালেখির পাশা-পাশি ফেসবুকে আমাদের একটি Group আছে যার নাম শিক্ষক কণ্ঠস্বর। যাতে আমি নিয়মিত শিক্ষা বিষয়ক পোস্টগুলো শেয়ার করে থাকি। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
ফেসবুক । টুইটার । ইনস্টাগ্রাম। গুগল+ । ইউটিউব
C.E.O & Admin
আমি মোঃ গুলজার হুসাইন। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও প্রশিক্ষক (ইংরেজী)। ব্লগিং ও ইউটিউবিং আমার নেশা ও পেশা। এই দু’টো ছাড়া একটি মুহুর্ত আমি কল্পনাও করতে পারিনা। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
আমি মোঃ রিয়াজ হোসেন। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও অনলাইন রাইটার(প্রযুক্তি)। ব্লগিং ও সোসাল মিডিয়া (ফেসবুক) এনালাইজ আমার নেশা ও পেশা। এই দু’টো ছাড়া একটি মুহুর্ত আমি কল্পনাও করতে পারিনা। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
No comments:
Post a Comment