আবরার ফাহাদ; মগের মুল্লূকে এক অনাকাঙ্খিত অতিথি। বেশি দিন অবশ্য তার এই মুলুকে জায়গা হয়নি। ফিরে গেছে সে, যেখান থেকে সে এসেছিল। হতভাগা শুধু আমরাই। হয় মগের সাথে আপোস করে, না হয় দরজা জানালা বন্ধ করে কোন কিছু দেখেও না দেখার ভান করে বেচে আছি। যদি ও একে বাঁচা বলে না। হ্যাঁ আজকে বাংলাদেশের আর এক বিশ্বজিৎ এর কথা বলছি।
নাম: আবরার ফাহাদ
পিতাঃমোঃ বরকত উল্লাহ
মাতাঃ রোকেয়া বেগম
গ্রামের বাড়িঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গায়।
কুষ্টিয়ার বাড়িঃকুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোড সংলগ্ন।
প্রাথমিক শিক্ষাঃকুষ্টিয়া মিশন স্কুল
মাধ্যমিক শিক্ষাঃকুষ্টিয়া জিলা স্কুল
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাঃ নটর ডেম কলেজ ঢাকা (Notre Dame College, Dhaka)
উচ্চ শিক্ষাঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (Bangladesh University of Engineering and Technology) এ তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন
জন্মঃ ১৩ মে ১৯৯৮
মৃত্যুঃ ৭ অক্টোবর ২০১৯
ব্যক্তিগত জীবন বৃত্তান্তঃ
তিনি কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি
নটরডেম কলেজে পড়াশোনা করেছেন। ৩১ মার্চ ২০১৮ এ, তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(বুয়েট) পড়াশোনা শুরু করেছিলেন।
কুষ্টিয়ায় আবরারের বাড়ি আ’লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির পাশে। তাঁর বাবা বরকতউল্লাহ ব্র্যাকে অডিটর এবং মা রোকেয়া খাতুন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ছিলেন। আবরার দুই ভাইয়ের বড় ছিল, তার ছোট ভাই আবরার ফায়াজ ঢাকা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এইচএসসি ছাত্র ছিল। ফায়াজ শের-ই-বাংলা হলের নিকটবর্তী ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসে থাকতেন।
যেভাবে তারঁ মৃত্যু হলোঃ
তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুমে নিহত হয়েছেন। তিনি একই হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। আবরার ১০ দিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল এবং ২০ অক্টোবর পর্যন্ত থাকতে চেয়েছিল। যাইহোক, যখন তার পরীক্ষাগুলি কাছাকাছি চলে আসছিল, তিনি পড়াশোনা করতে হলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
৬ অক্টোবর ২০১৯, রবিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে কিছু তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ও অন্যান্য দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের শের-ই-বাংলা হলের ২০১১ নং কক্ষে ডেকে পাঠিয়েছিল বলে দাবি করেছেন, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, বুয়েট ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু। ছাত্রলীগ নেতা, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অনিক সরকার, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং একই ইউনিটের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, অমিত সাহা তার উপর হামলার নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শের-ই-বাংলা হলের নিচতলায় সোমবার ভোর তিনটায় পুলিশ আবরারের লাশ উদ্ধার করে। মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মাশুক এলাহী রাত ৩ টার দিকে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন।আবাসিক হলের দ্বিতীয় তলায় ইনস্টল করা একটি ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা দ্বারা ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে যে কয়েকজন লোক তার হাত ও পায়ে করিডরে নীচে টেনে নিচ্ছেন।
মৃত্যুর কারনঃ
আবরার ফরহাদের মৃত্য যেহেতু একটি প্রকাশ্য ঘটনা এবং এর আসামীদের সকলেই এখন পুলিশ হেফাজতে। তাদের সঠিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই হয়তবা বেরিয়ে আসবে আসল সত্য। তথাপি, অধিকাংশের মতে ভিন্ন মত ও মতাদর্শের কারনেই হয়ত তাকে জীবন দিতে হয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার আগে আসুন যে ফেসবুক স্ট্যাটাসের ঠিক পরপরই তাকে পিটিয়ে হত্যা করাহয়। সেটিতে একটু চোখ বুলিয়ে আসি।
কি ছিলো সেই
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ?
আবরার ফাহাদ তাঁর স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন-
১.৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।২.কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।
৩.কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।
হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
"পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।"
এই স্ট্যাটাসের পরদিন অর্থাৎ ৫ই অক্টোবর সন্ধ্যা ৫.৩২ টায় দেওয়া স্ট্যাটাসের পরের দিন ৬ অক্টোবর ২০১৯, রবিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে আবরার ফরহাদকে শের-ই-বাংলা হলের ২০১১ নং কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অনিক সরকার, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং একই ইউনিটের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, অমিত সাহার নেতৃত্বে ২২ জন ছাত্রলীগের সদস্য তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। আবাসিক হলের দ্বিতীয় তলায় ইনস্টল করা একটি ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা দ্বারা ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে যে কয়েকজন লোক তার হাত ও পায়ে করিডরে নীচে টেনে নিচ্ছেন।
পরবর্তী ঘটনা প্রবাহঃ
|
আবরার ফাহাদ হত্যার খুনীদের একটি অংশ |
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন -
- মেহেদী হাসান, (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ১৩ ব্যাচ),
- মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪ ব্যাচ, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ),
- অনীক সরকার (১৫ ব্যাচ),
- মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল বিভাগ, ১৫ ব্যাচ),
- ইফতি মোশারফ হোসেন (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬ ব্যাচ),
- মনিরুজ্জামান মনির (পানিসম্পদ বিভাগ, ১৬ ব্যাচ),
- মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫ ব্যাজ)
- মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- মোজাহিদুল (ইইই বিভাগ, ১৬ ব্যাচ),
- তানভীর আহম্মেদ (এমই বিভাগ, ১৬ ব্যাচ),
- হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬ ব্যাচ),
- আকাশ (সিই বিভাগ, ১৬ ব্যাচ),
- শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- শাদাত (এমই বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- তানীম (সিই বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- মোর্শেদ (এমই বিভাগ, ১৭ ব্যাচ),
- মোয়াজ (এমআই বিভাগ)
- মনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ)
হত্যার অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের দশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে এবং রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপ সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাতুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, ছাত্রলীগ কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মোজাহিদুর রহমান, মেহেদী হাছান রবিন। পরবর্তীতে আরও ৩ জন - মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, শামসুল আরেফিনকে ডেমরা, গাজীপুর বাইপাস, ঢাকা জিগাতলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং বুয়েটের শিক্ষার্থীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে। তার মৃত্যু বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বুয়েটে শিক্ষার্থীরা ৮ দফা দাবিপূরণের লক্ষ্যে অবস্থান নিয়ে দাবি জানাচ্ছে। দাবিগুলো হলো:
১. খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিতভাবে শনাক্তকৃত খুনীদের সকলের ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন তা উনাকে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে সকলের সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
৫. আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ বিকেল পাঁচটার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৬. রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
৭. মামলা চলাকালীন সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৮. সাংগঠনিকভাবে বুয়েট থেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের গোড়ায় একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও আবরার হত্যাকারীদের ফাঁসির শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে। খুলনায়
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসের সামনে মহাসড়কে ব্যারিকেড করে কালো ব্যাজ দিয়ে মুখ বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে একটি মানববন্ধন গঠন করে এবং আবরার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আবরার ফাহাদের বীভৎস হত্যার প্রতিবাদে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। শিক্ষার্থীরাও আধা ঘণ্টা রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছিল।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সিলেটের ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে একটি মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে যা সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে প্যারেড করে। ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, যশোর, পটুয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী তে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।
অমিত শাহের নাম আসামীদের তালিকায় নেই!
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হলেও সেই তালিকায় নেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা। অথচ শুরু থেকেই আবরারকে হত্যায় অমিত সাহার নাম এসেছিল।
অমিত সাহার নাম আসামির তালিকায় না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা হচ্ছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বুয়েট শিক্ষার্থী অমিত সাহাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন।
আবরার ফাহাদকে নিয়ে এক ভারতীয় তরুনী প্রতিক্রিয়াঃ
ভারতের জয়দেবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তনুশ্রী রায় এ হত্যার প্রতিবাদ করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। দুই বাংলায় সেই স্ট্যাটাস নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। নিচে স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হলো-
যদিও আমি ভারতীয় তারপরও বাংলাদেশের প্রতি আমার আলাদা একটা টান রয়েছে। কারণ আমার পূর্বপুরুষ বাংলাদেশেরই মানুষ ছিলেন ৪৭'র দেশভাগের পর ভারতে চলে আসেন। বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা আমি সবসময় চাই। শুনলাম ভারত-বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ায় একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। স্ট্যাটাসটা আমি পড়লাম, নিজের দেশের স্বার্থ নিয়ে লিখার জন্য কিভাবে নিজের দেশেরই লোক একটা ছেলেকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে এটা আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে। সামান্য ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে মানুষ খুন করে ফেলা হচ্ছে বাংলাদেশে। কিভাবে এমন একটা দেশে মানুষ বাস করে!
বিশ্বজিৎ হত্যার পর যেমন সারা বাংলাদেশ সহ বিশ্ব বিবেক থমকে গিয়েছিল, তেমনি আবরার ফাহাদের এরকম অনাকাঙ্খিত মৃত্যু বাংলাদেশে আইনের শাসন ও আইন শৃঃখলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল আরেকবার। যে দেশে বিশ্বজিতের হত্যাকারীরা আজও এদের মাটিতে বুক উচিয়ে ঘুরে বেড়ায় সেখানে আবরার ফাহাদের মতো হাজারো মেধাবী প্রাণ এভাবেই হারিয়ে যাবে, এভাবে বিচারের বাণী যদি নিঃভৃতে কেদে ফেরে তবে আমাদের দেশবাসীর আমরাও হয়তবা যে কোন সময় এরুপ প্রতিহিংসার শিকার হবো।
No comments:
Post a Comment