666 নাম্বারটি শয়তানের নাম্বার বা ভয়ানক নাম্বার হিসেবেই বিবেচিত হয় খ্রিস্টানদের কাছে। কিছু কিছু মানুষ এই নাম্বারটি কে একটি অশুভ নাম্বার বা শয়তানের চিহ্ন হিসেবে মনে করে থাকে। কিন্তু 666 এই নাম্বারটি আসলে আসলো কোথা থেকে আসলো? আর এর প্রকৃত অর্থই বা আসলে কি আজকে আমরা সেটি জানবো। 666 নাম্বারটি আমরা দেখতে পাই পবিত্র বাইবেলের বুক অফ রিভেলেশন দ্য লাস্ট বুক অফ নিউ টেস্টামেন্ট থেকে। এই বইটি যারা পড়েছেন এবং তারা ভাল করে জানেন এটি John কর্তৃক লিখিত। এই বইয়ে আকাশের নক্ষত্র থেকে পড়া একটি ড্রাগন কথা উল্লেখ করা হয় যা সমগ্র সাগরের পানিকে বিষাক্ত করে দেয় এবং মানুষের রক্তে নিমজ্জিত হয় সমস্ত উপত্যকা।
'666' এর বিষয়টি আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্মে সরাসরি কোন খানে না আসলেও প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেন, “দাজ্জাল পৃথিবীতে ৪০ দিন অবস্থান করবেন। এর একদিন এক বছরের সমান, একদিন এক মাসের সমান, একদিন এক সপ্তাহের সমান। বাকি দিনগুলি তোমাদের দিনের মতো।” (আল হাদিস)
এখানে, আমরা একটা টাইমফ্রেম পাই। দাজ্জাল যখন আমাদের সামাওয়াত অর্থাৎ আমাদের ডাইমেনশনে আসবে তখন আমরা তাকে দেখতে পাব। আর নবীজি (সা) বলে গেছেন যে, দাজ্জাল হবে একজন কোঁকড়ানো চুলবিশিষ্ট ইহুদি যুবক আর তার অর্থোডক্স ইহুদিদের মত লম্বা চিপ থাকবে। তখন তার দিনগুলি হবে আমাদের দিনের মত। কেন? কারণ তখন সে আমাদের টাইম এন্ড স্পেস বা আমাদের সামাওয়াতে অবস্থান করবে।
কিন্তু আমাদের ডাইমেনশনে আসার আগে দাজ্জাল তিনটি স্টেজ পার করবে। তিনটি শেডো অফ ডার্কনেস। হাদিসে একে বলা হয়েছে,
(১) একদিন এক বছরের সমান,
(২) একদিন এক মাসের সমান,
(৩) একদিন এক সপ্তাহের সমান।
আর বাইবেলে একে প্রকাশ করা হয়েছে 666 দ্বারা।
(১) 600
(২) 60
(৩) 6
এই তিনটি সময়ে দাজ্জাল তার মানুষরূপে পৃথিবীতে আগমনের জন্য পৃথিবীকে প্রস্তুত করবে। কীভাবে? অন্য সামাওয়াত থেকে তার আর্মিদের দ্বারা যাদেরকে আমরা বলতে পারি, দাজ্জালস ওয়ারিওরস বা দাজ্জালের যোদ্ধাদল।
দাজ্জাল কোথা থেকে তার কার্যক্রম শুরু করবে সেটা তামিম আদ দারির (রা) হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, দাজ্জাল একটি আইল্যান্ড অর্থাৎ দ্বীপে বন্দী রয়েছে। সেই দ্বীপে আল জাসসাসা বা গোয়েন্দা রয়েছে। অর্থাৎ সেই দ্বীপ গোয়েন্দাগিরির জন্য বিখ্যাত হবে। কোন দ্বীপ সেটা? সেটা হলো ব্রিটেন। দাজ্জাল তার কার্যক্রম শুরু করে ব্রিটেন হতে। অর্থাৎ ব্রিটেন সমগ্র বিশ্ব শাসন করবে।
এবার আমরা এনালাইসিস করতে পারি, দাজ্জালের শেডো অফ ডার্কনেসের সময়গুলোকে।
(১) দাজ্জালের একদিন এক বছরের সমান = বাইবেলের ৬৬৬ এর ৬০০ = একটি বৃহৎ সময় = প্যাক্স ব্রিটানিকা = দাজ্জাল ব্রিটেনের দ্বারা বিশ্ব শাসন করবে।
(২) দাজ্জালের একদিন এক মাসের সমান = বাইবেলের ৬৬৬ এর ৬০ = প্রথম পর্যায়ের চেয়ে কিছু কম সময় = প্যাক্স আমেরিকানা = দাজ্জাল আমেরিকা দ্বারা বিশ্ব শাসন করবে।
(৩) দাজ্জালের একদিন এক সপ্তাহের সমান = বাইবেলের ৬৬৬ এর ৬ = খুব কম সময় = প্যাক্স জুদাইকা = ইজরায়েল বিশ্ব শাসন করবে।
এই তিনটি পর্যায় কমপ্লিট হওয়ার পর দাজ্জাল মানুষ হিসেবে জেরুজালেম থেকে নিজেকে মসীহ ঘোষণা করবে অর্থাৎ খুরুজ অফ দাজ্জাল সংগঠিত হবে।
আমরা এখন প্যাক্স আমেরিকানা থেকে প্যাক্স জুদাইকার দিকে যাচ্ছি। কিন্তু প্যক্স ব্রিটানিকা থেকে প্যাক্স আমেরিকানায় আসতে দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। প্যাক্স আমেরিকানা থেকে প্যাক্স জুদাইকায় যেতেও বৃহৎ বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হবে। কেন? ইজরায়েল যদি জেরুজালেম থেকে বিশ্ব শাসন করতে চায়, সেটা অনেক কঠিন। কারণ, পৃথিবী এত বিশাল! আর ইজরায়েল কত ছোট! হয় ইজরায়েলকে তার সীমানা প্রসারিত করে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মত বিরাট হতে হবে অথবা বিশ্বকে ছোট হয়ে আসতে হবে। নিউক্লিয়ার বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বকে ছোট করে ফেলবে যা ইজরায়েলের পক্ষে শাসন করা মেনেজেবল হবে।
দুই চোখের মাঝখানে কাফির এবং 666 এর রহস্য
--------------------------------------------------------
.
রাসুলুল্লাহ (ﷺ ) বলেছেন, “আল্লাহ তা’আলা তারপর প্রতিটি মানুষকে তার ঈমান প্রদর্শনের নিমিত্তে প্রত্যেকের দুই চোখের মাঝখানে এক আলোর দ্যুতি স্থাপন করলেন এবং সকল মানুষের এই অবস্থাকে আল্লাহ তা’আলা আদমকে দেখালেন। অসংখ্য মানুষের দু’চোখের মাঝখানে আলোর দ্যুতি ছড়ানো এ দৃশ্য আবলোকন করার পর আদম শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয়ে ভীত হয়ে আল্লাহকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, ঐসব মানুষ কারা?’ আল্লাহ তা’আলা তাকে বললেন যে তারা সকলে তার (আদমের) বংশধর। অতঃপর আদম একজন মানুষের খুব কাছাকাছি এসে এক ব্যক্তির দু’চোখের মাঝাখানের আলোর দ্যুতি দেখে বিস্মিত হয়ে আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে আল্লাহ বললেন, ঐ ব্যক্তি হচ্ছে দাউদ, যিনি তোমার বংশধরদের মধ্যে শেষ জাতির অন্তর্ভুক্ত।.....।” -(তিরমিযি)
.
দাজ্জাল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে তার দুই চোখের মাঝখানে কাফির লেখা থাকবে। যা প্রত্যেক মুমিন পড়তে পারবে,হোক সে অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন অথবা নিরক্ষর। (মুসলিম; মুসনাদে আহমদ-১৪৯৯৭)
দাজ্জাল হল ভণ্ড মসিহা, যাকে ইয়াহুদিরা সত্য মাসিহা মনে করবে। তারা বলে দাজ্জালের নাম হল মসিহা বিন দাউদ (দাউদের পুত্র মাসিহা)। যে দাউদ আলাহিস সালামের দু’চোখের মাঝখানে ঈমানের নূরের দ্যুতি চমকাচ্ছিল তাদের দাবী অনুসারে তার পুত্র হবে দাজ্জাল। আমরা জানি ইমানের আলো তো খুব দুরের কথা বরং তার মাথায় কাফির লেখা থাকবে।
.
খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস হল দাজ্জাল বা এন্টিক্রাইস্টের মাথায় 666 লেখা থাকবে, এবং সে তার অনুসারীদের দুই চোখের মাঝখানে এবং ডান হাতের তালুতে এই 666 এর সীল মেরে দিবে।
“৭ নং সংখ্যা হল উৎকৃষ্টতার ও সম্পূর্ণতার প্রতীক যা ঈশ্বরকে নির্দেশ করে। অন্যদিকে সংখ্যা ৬ মানুষকে নির্দেশ করে কারণ ঈশ্বর ষষ্ঠ দিন মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন। 666 হল বিস্টের প্রতীক এবং এটার দ্বারা ঐ সকল মানুষকে বুঝানো হয় যারা অহংকারবশত নিজেকে ঈশ্বরের একটি অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।” ---(Is the age of the Antichrist, Martyrdom, Rapture and The Millennial Kingdom coming? (II)- Paul C. Jong)
.
রেভেলেশান ১৩:১ থেকে বুঝা যায় এই 666 বা এন্টি-ক্রাইস্ট (দাজ্জাল, যে নিজেকে ঈশ্বর সাব্যস্ত করতে চাইবে) সে অনেক মিরাকল করবে, মৃতকে জীবিত, আকাশ থেকে অগ্নিবর্ষণ করাবে যাতে মানুষরা তাকে অনুসরণ করে। Paul C. Jong একটু গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “অন্যভাবে বলতে গেলে, শয়তান মানুষকে দাজ্জালের এমন অনুসরণকারী বানাবে যে পূর্বে মানুষ ঈশ্বরকেও এভাবে অনুসরণ করেনি”
.
যাইহোক, যে সকল মানুষের কাছে 666 মার্ক (সীল) থাকবে না, তাদের প্রতি কোন রহম করা হবে না, তাদের উপর যুলুম করে হত্যা করা হবে, তাদেরকে কোন প্রকার লেনদেন করার অনুমতি দেয়া হবে না। আমরা যখন কোণ ব্যক্তি, সংস্থা, কোম্পানি বা রাষ্ট্রকে যখন 666 বা পিরামিড ইত্যাদি সাইন ব্যবহার করতে দেখি তখন এটা স্পষ্টই বুঝাচ্ছে এরা হল দাজ্জালের অনুসারী, বা কোন মাধ্যমে দাজ্জাল থেকে এই চিহ্ন পেয়েছে। এরাই দাজ্জালের জন্য অপেক্ষারত, দাজ্জালের পূজারি, তার পথ সুগমকারী। এরা আজ বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ইউরোপ আমেরিকার শাসক থেকে তাদের যাজক পর্যন্ত, সাধারণ মানুষ থেকে আইডল, মিলিনিয়ার বা স্টার পর্যন্ত, ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি পর্যন্ত এই 666 প্রতীক বহনকারী রয়েছে।
2 comments:
ইয়া আল্লাহ মাফ করো
Allah dazzal fetna theke amderk rokha koro amin
Post a Comment