"দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের ডগার উপর একটি শিশির বিন্দু।"
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলা ১৪ টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে একটি বৃহৎ উপজেলা। এই উপজেলার প্রত্যেকটি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে জানা-অজানা না বলা কথা। তেমনি এক না বলা ইতিহাস এর খোঁজে আমরা বেরিয়ে পড়লাম আমরা তিনজন । আমি মোঃ গোলজার আলী, ব্যাংক এশিয়া কর্মকর্তা মোঃ আতিরাজ হোসেন ও আমার ছোট ভাইসম মোঃ বিদ্যুৎ বাশার । উদ্দেশ্য হোসেনাবাদ এর রাজবাড়ী রহস্য উদঘাটন করা। আমরা যথারীতি বিকাল ৫:০০ টায় রওনা হয়ে দৌলতপুর হতে বেলা ৫:৩০ টায় পৌঁছালাম হোসনাবাদ রাজ বাড়ী
হোসেনাবা (কৈপাল) রাজবাড়ী |
মল্লিকবাড়ী বা রাজবাড়ীর বর্তমান উত্তরসূরী |
মল্লিকবাড়ী তথা হোসেনাবাদ রাজবাড়ীর এলাকাতে অবস্থিত মসজিদ |
জমিদার শরৎ কুমার রায়ের ভিটা বদল।
নাটোরের (দয়ারামপুর অংশের) জমিদার রাজা শরৎ কুমার রায় বাহাদুরের স্ত্রী মৃত্যুবরণ করার পরে একা হয়ে পড়েন তিনি। শরৎ কুমার রায়ের শুভাকাঙ্খিবৃন্দ তাঁর দেখাশোনা করার জন্য সুদর্শিনী প্রভাসিনী দেবী নামে এক নারীকে তাঁর সেবাদাসী হিসেবে নিয়োগ দেয়। শরৎ কুমার রায় এক-সময় সুদর্শিনী প্রভাসিনী দেবীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। প্রভাসিনীর ভবিষ্যৎ ভাবনা তাঁকে উদ্বেল করে তোলে অথবা প্রভাসিনীই তাঁকে এব্যাপারে উদ্বেগাকুল করে তোলেন। শরৎ কুমার রায় ভাবলেন, তাঁর মৃত্যুর পরে মৃত্যুর পরে তাঁর সন্তানেরা সুদর্শিনী দেবীকে রাজবাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে।
কৈপাল রাজবাড়ীর বাইরের বৈঠকখানা |
রাজবাড়ীর চিলেকোঠা |
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শরৎ কুমার রায়ের জমিদারীর একাংশ ছিলো। সুদর্শিনী প্রভাসিনীর ভবিষ্যত ভাবনায় তিনি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের তারাগুনিয়া বাজারের সন্নিকটে হোসেনাবাদে তার জন্য বিশালাকার এক ভবন তৈরি করে দেন। ভবনটি নির্মিত হয় ১৯৪০ সালে। এটি রাজবাড়ি ছিলো না। তবে রাজা শরৎ কুমার রায়ের মালিকানাধীন ভবন হিসেবে হোসেনাবাদ রাজবাড়ি নামেই পরিচিতি পায়। স্থানীয়ভাবে এটি কৈপাল রাজবাড়ি নামেও পরিচিত। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে রাজা শরৎ কুমার রায় প্রভাসিনী দেবী উভয়ে দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। মুর্শিদাবাদের জনৈক হাজী তফিলউদ্দিন রাজা শরৎ কুমার রায়ের সাথে জমি ও বাড়ি বিনিময় করে ভবনটির মালিকানা গ্রহন করেন। বর্তমানে হাজী তফিলউদ্দিনের বংশধরগণ বাড়টিতে বসবাস করছেন।
চিত্র এবং তথ্য ঋণঃ সৈয়দ তারেক স্যার।
No comments:
Post a Comment